পানুর ডায়েরী – ২ - মুহাম্মদ সেলিম রেজা
সে বছর জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষ্যে স্কুলের খেলার মাঠে মেলা বসেছে। টিফিন টাইমে অধিকাংশ ছেলেমেয়ে মেলায় ঘুরতে গেছে, কেউ কেউ কমনরুমে আড্ডায় মত্ত। এই অবসরে পানু এক ময়রার দোকান থেকে মাটির ভাঁড়ে খানিকটা মিষ্টির রস চেয়ে নিয়ে চুপিসারে ক্লাসরুমে ঢুকল। তারপর তা মুখে নিয়ে মেয়েদের বসার বেঞ্চে ছিটিয়ে দিয়ে পুনরায় মেলায় চলে গেল।
পরের ক্লাস দোর্দণ্ড প্রতাপ প্রতাপস্যারের। টিফিন শেষের ঘন্টা বাজতে ছেলেমেয়েরা হুড়মুড়িয়ে ক্লাসরুমে ঢুকে কোনদিকে না তাকিয়ে যে যার আসনে বসে পড়ল। কয়েক মুহূর্ত বাদে নিশা নামের একটি মেয়ে তড়াক করে লাফিয়ে উঠে পাছায় হাত দিয়ে দেখে শাড়িতে কি যেন লেগেছে, চিটচিট করছে। তার দেখাদেখি বাকি মেয়েরাও উঠে দাঁড়িয়ে নিজের নিজের পশ্চাতদেশ হাতড়াতে শুরু করেছে। ততক্ষণে প্রতাপ স্যার দোরগোড়ায় চলে এসেছেন। মেয়েদের নাচানাচি করতে দেখে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি হয়েছে রে?
– স্যার কেউ বেঞ্চে মিষ্টির রস ছড়িয়ে রেখেছে। আমাদের শাড়ি নোংরা হয়ে গেছে দেখুন। নিশা নামের সেই মেয়েটি স্যারের দিকে পিছন করে দাঁড়াল।
প্রতাপ স্যারের মুখ সবসময় লটকে থাকে। মেয়েটি পাছা প্রদর্শন করায় তা প্রায় ঝুলে পড়ল। ওই অবস্থাতেই স্যার মেয়েটিকে পাশ কাটিয়ে বেঞ্চের কাছে পৌঁছে চোখের পাতা বিঘতখানিক ফাঁক ( যাকে বলে চোখ ফেরে দেখা) করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ব্রতী হলেন।
অতঃপর হাঁক পাড়লেন, পটলা ডাণ্ডা লাও। পটলা স্কুলের পিওন। অন্যান্য কাজের সাথে সপ্তাহে অন্তত চারদিন এই ধরণের ডাকে সারা দিতে হয় তাঁকে। স্যার সোজা হবার আগেই তিনি ফুট তিনেক লম্বা বেতের ছড়ি হাতে পৌঁছে গেলেন। তাঁর হাত থেকে ছড়িখানা ছিনিয়ে নিয়ে প্রতাপস্যার ভ্রূকুঞ্চিত করে ছেলেদের পানে তাকিয়ে হুঙ্কার ছাড়লেন, এই যে বাপের ছেলেরা সত্যি করে বল দেখিনি কে করেছ এই কাজ?
স্যার বিরক্ত হয়ে বললেন, হতভাগা ঘন্টা পরার আগে যেতে পারিস না?
চলবে…….
#storyandarticle
https://sahityashruti.quora.com/

Post a Comment